অনুসরণকারী

শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩

খিল দ্বিতীয় পর্ব




খিল
সাথী দাস
দ্বিতীয় পর্ব




মাধবীলতার পরিত্রাহি চিৎকার নিধির ঘরের দরজায় সশব্দে আঘাত করছিল। গায়ের কম্বল আলগা করে চোখ মেলে উঠে বসার চেষ্টা করল নিধি। শশাঙ্কর ঘুম অনেক আগে ভেঙে গেছে। তবুও বিছানায় চুপ করে শুয়েছিল সে। কারণ ওর বুকের ওপর নিধির জ্বরতপ্ত ঘুমন্ত দেহটা এলিয়েছিল। নিধির শীতল হাত চেপে ধরে শশাঙ্ক বলল,
-আজ উঠতে হবে না। আমি বাইরে গিয়ে বলছি তোমার জ্বর।
-না না, শরীরের কথা বললে মা আবার ও বাড়ির কথা তুলে খোঁটা দিয়ে না জানি কী বলবে! সব কথায় আমার বাবাকে টেনে কথা বলে। আমার একদম ভালো লাগে না। পান থেকে চুন খসলেই আমাকে জমিদার বাড়ির মেয়ে বলা কেন? আমি কোন ঘরের মেয়ে তোমার মা আর দাদা কি বিয়ের আগে জানত না? নাকি সব জেনেশুনেই এমন ঘর থেকে মেয়ে নিয়ে এসেছে, যার হয়ে কথা বলার জন্য আগেপিছে কেউ থাকবে না! আমি যাই, তিনবেলা সবার থেকে এত কথা শুনতে...
-সবসময়ই তো মা কিছু না কিছু বলছে! তুমি কাজ করলেও বলছে। না করলেও বলছে। কাজ করে শোনার থেকে, না হয় না করেই শুনলে! ওষুধ খেয়েও তো শরীর ঠিক হল না! বাড়িতে ডাক্তার ডাকব?
-এখন তেমন শরীর খারাপ লাগছে না। শুধু একটু দুর্বল লাগছে। কাল দিদি কয়েকটা কাজ দিয়ে গিয়েছিল। করতে পারলাম না। রাগ করে আবার কী বলবে কে জানে!
তৃণা নিজের ঘর থেকে ঘুমচোখে বেরিয়ে ভেঙে পড়া খোঁপা সামলে দোতলার বারান্দা থেকে হাঁক পেড়ে বলে উঠল,
-সকাল সকাল এত চিৎকার কেন লতাদি? বাড়িতে ডাকাত পড়ল নাকি?
-আজ তোমার এত বেলা কেন বড়বৌ?
-তা সে কৈফিয়ৎ কি তোমাকে দিতে হবে নাকি গো?
-না না বড় বৌ। আমি তা বলিনি.... ভাবলাম তোমার শরীর খারাপ করল কিনা...
-বালাই ষাট! শরীর খারাপ করে মরুক আমার শত্তুর! দুনিয়ার সব শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে আমি দিব্যি ভালো আছি। মাকে তো বলেই রেখেছিলাম কাল। মা বলিনি আপনাকে? ভুলে গেছেন নাকি! আমার ঘরের মানুষটার আপিসের এক কলিগের মেয়ের বিয়ে ছিল। সে কী আর সাধারণ ঘরের মতো যে সে বিয়েবাড়ি গো? যেমন উঁচু মানুষজন, তেমন তাদের বিয়ের আয়োজন! আলো, বিয়ের মন্ডপ, রান্না-খাওয়ার বহর আর মেয়ের গায়ের গয়না দেখলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়! জামাই তো নয়, যেন রাজপুত্তুর! জামাই নাকি বিদেশে থাকে। মস্ত চাকরি করে। বিয়ের পর মেয়েকে নিয়ে সেখানে চলে যাবে। গা ভ'রে শাড়ি গয়না পরে গেছি। তাও ওদের পাশে নিজেকে যেন কেমন ধারা লাগছিল। তা কাকডাকা সকালে তোমার এত হাঁকডাক কেন শুনি? আমরা কাল কত রাতে ফিরেছি জানো? দিলে তো আমার কাঁচা ঘুমটা ভাঙিয়ে! মেজ বৌ ওঠেনি? আমি যে কাল তাকে বলে রাখলাম সকালে উঠে বাসি কাজ সেরে বাবার মাথায় একটু জল ঢেলে যেন বাটায় জল-বাতাসা দিয়ে দ্যায়! একটা দিনও কি সে...
-গা-টা হঠাৎ বড্ড গসগস করছে দিদিভাই। মাথা তুলতে পারছিলাম না। শেষ রাতে ঘুমিয়েছি। ভোরবেলা ঘুম ভাঙেনি...
একতলার ঘরের দরজা খুলে নিধি বেরিয়ে এসেছে বারান্দায়। তৃণার মন থেকে তখনো বিয়েবাড়ির রেশ কাটেনি। দেহের ভাঁজে জুঁইফুলের সুগন্ধি জড়িয়ে রয়েছে। এক গা গয়না ঝনঝনিয়ে মাথার চুল সামলে খোঁপা শক্ত করে তৃণা বলল,
-জ্বরটা বোধহয় ভালোই বাধিয়েছিস বোন। তোর তো দেখি আমার ছেলেদের মতো অবস্থা! একদিন একটু বেশি কাজ দেখলেই কাজের নামে গায়ে জ্বর এসে যায়! তারা পুরুষমানুষ! তাদের সঙ্গে কী আর মেয়েমানুষের তুলনা করলে চলে রে? তা তুই আবার শরীর খারাপের কথা বলতে কষ্ট করে উঠে এলি কেন? শশীকে দিয়ে বলে পাঠালেই হয়। যা ঘরে গিয়ে শুয়ে থাক। তুই শুয়ে থাকলে, সংসার কি আর থেমে থাকবে? কারও জন্য কিছু থেমে থাকে না। দিব্যি চলে যায়। তোকে কিছু করতে হবে না। তারপর তো আবার এর-ওর কাছে বলে বেড়াবি, এরা শরীরের ভালো-মন্দ বোঝে না। কাজটাই আগে। বরের ঘরে এসে রাজার হালে থাকলে কী হবে? একটু সুযোগ পেলে শ্বশুরবাড়ির নিন্দে করতে তো কেউ ছাড়ে না।
-এভাবে বলো কেন দিদি? আমি কার কাছে কবে কী বলেছি?
-তা সে চোখ-কান খোলা রাখলেই জানা যায়। নেহাৎ মাথার ওপর দেবতার মতো ভাসুর ছিল। নইলে এতবড় সংসারে কী দিয়ে কী হয়, সেই খোঁজ কে রাখে! সবার জন্য এত করেও মানুষটা নিজের জনের কাছ থেকে প্রাপ্য মান পেল না। তুই ঘরে যা বোন, আমিই স্নান সেরে আসছি। তোর ঘরে চা পাঠিয়ে দেব। মা আপনি শাকপাতা কিছু রাখলে দেখেশুনে রাখুন। লতাদি মোচা এনেছ গো? তোমাদের বড়বাবু সেদিন মোচাচিংড়ির কথা বলছিল। আনলে রেখে যেও। সন্ধেবেলা এসে আমার ঘর থেকে পয়সা নিয়ে যেও বুঝলে! এখন আমি স্নানে গেলাম। নিচে নামতে পারছি না।
-তোমার কাছে আমি কোনদিন টাকা চেয়েছি বড় বৌ? তোমার যা ইচ্ছে হয় নাও না! তোমার কাছে টাকা বাকি রাখা মানেই ব্যাঙ্কে থাকা জমা থাকা.... ওসব নিয়ে আমি ভাবি না। টাকা-পয়সার ব্যাপারে আপিসবাবুর মতো সজ্জন মানুষ আর দ্বিতীয়টি নেই।
-তাও ভালো। ঘরের লোক না দিলেও, বাইরের লোক তো খানিক মান দ্যায়! মা আপনি স্নান সেরে নিন। আমি স্নান সেরে রান্নাঘরে ঢুকে চা পাঠিয়ে দিচ্ছি। ছেলেপিলেরা সব ইস্কুল পাঠশালায় যাবে! তার আপিস আছে। ওদিকে বাবার পুজো হল না। এখনো রান্নাঘরে হাঁড়ি চড়ল না.... কোনদিকে যে যাই...
-দিদি আমি ঠাকুরঘরে যাচ্ছি। তোমাকে আর এদিকে আসতে হবে না।
-তোর যে শরীর খারাপ বললি মেজ?
-মন খারাপ হওয়ার থেকে শরীর খারাপ হওয়া ঢের ভালো দিদিভাই। তুমি চায়ের জল চাপাও। আমি স্নান সেরে পুজো দিয়ে এসে কুটনো কুটে দিচ্ছি। চাঁপা কাজে এসে পড়লে ওকে বাসন মাজতে দিয়ে ঠাকুরঘরের বারান্দা মুছিয়ে নেব। আপাতত ভিতরটা মুছে জল বাতাসা দিয়ে আসি।
কর্মব্যস্ততায় একটি নতুন সকাল শুরু হল মফঃস্বলের বুকে। দুই গৃহলক্ষ্মীর মধ্যে যা কিছু মনোমালিন্য গ্লানি সকলই ধুয়ে যাবে নিত্যকর্মের চাপে। সকালের যত মলিনতা বিকেলের চায়ের উষ্ণতায় বাষ্প হয়ে উবে যায়, সংসারের এই নিয়ম...
মাধবীলতা এ সংসারে আসার পর ঘরের ভিতরে ও বাইরে অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। নিতান্তই অপরিণত বয়সে নাগের বাড়িতে পা রেখে শাড়ি, গয়না আর সিঁদুরের ভারে জড়োসড়ো হয়ে থাকত সে। শাশুড়ি মাকে নিয়ে তার কোনও অভিযোগ ছিল না। প্রাণ দিয়ে মাধবীলতাকে আগলে রাখত সে। রক্ষা করত সাংসারিক রুক্ষতা থেকে। আজও মাধবীলতা শয়নে স্বপনে জোড়হাতে তাকেই স্মরণ করে। মাধবীলতার মনে স্থির বিশ্বাস, এ সংসারের যা কিছু শ্রী, আয়-উন্নতি.... সকলই তার শাশুড়ি মায়ের আশীর্বাদ।
বিয়ের পর একান্নবর্তী সংসারে মাধবীলতার কোনও সক্রিয় ভূমিকা না থাকলেও, সকালবেলা চোখ মেলে কাঠের উনুনে হাঁড়ির পর হাঁড়ি চড়তে দেখে অবাক হয়ে যেত সে। একসঙ্গে এত রান্না সে কস্মিনকালেও দেখেনি। সুবৃহৎ হাঁড়ি-বাসনের ঝনঝনানি, রান্নার ঠাকুরের চিৎকার, বাড়ির পুরুষদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যস্ততা, সেই সঙ্গে আকাশ-বাতাস জুড়ে রান্নার সে এক অপূর্ব সৌরভ! বিবাহ পরবর্তী প্রত্যেকটি দিনই যেন এক-একটা অনুষ্ঠানের দিন মনে হতো। কর্মে তৎপর স্বামীকে ঘোমটার আড়াল থেকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখত মাধবীলতা। কাজের ফাঁকে নবদাম্পত্যের সেই চোরা দৃষ্টিবিনিময় নিয়ে মধ্যাহ্নভোজনের পর মেয়েমহলে যে চটুল রঙ্গ-রসিকতার আবহ সৃষ্টি হতো, আচারের বোয়াম কোলে নিয়ে সেই সকলই নতমস্তকে উপভোগ করত মাধবীলতা। একা থাকলে আজও পাতানো সইরা স্মৃতিতে এসে ভিড় করে। তারা কোথায় আছে, সে প্রশ্ন বুকের গভীরে ঢেউয়ের মতো মাথা তুলে আবার আছড়ে পড়ে সৈকতে।
সকালের জলখাবারের পর মাধবীলতা দুপুরের অপেক্ষা করত। মাঠ থেকে সমস্ত কৃষকরা ফিরলে গোবর দিয়ে নিকোনো উঠোনে সারি সারি চাটাই পেতে তাদের খাওয়ানোর যে এলাহি আয়োজন করা হতো, তা দেখে মাধবীলতার হৃদকম্প শুরু হয়ে যেত। রান্নার ঠাকুর ও বাড়ির পুরুষ মানুষদের পাশে থেকে সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণার মতো একহাতে বালতি অপর হাতে একটা হাতা নিয়ে খাবার পরিবেশন করত মাধবীলতার শাশুড়ি। মাধবীলতা মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকত সেইদিকে। মায়াঘেরা সেই হাতদুটো যখন সন্ধেবেলায় গন্ধ ফুলের তেল মেখে মাধবীলতার সিঁথির চারপাশে বিলি কেটে দিত, ভালোলাগায় মাধবীলতার চোখে জল এসে যেত। নাগের বাড়ির প্রত্যেকটি ঘর সর্বদা কোলাহলে মুখর হয়ে থাকত। আজ সেই বাড়িও নেই, সেই পরিবারও নেই। সকল স্মৃতি বুকের পাঁজরের মধ্যে মাধবীলতা একলা বয়ে বেড়ায়।
সেই সময় সংসার অনেক বড় ছিল। এতজনের মধ্যে আজীবন থেকেও মাধবীলতা কোনোদিন কোনও অভিযোগ জানায়নি। সময় যেন উল্কার বেগে পার হয়ে যেত। দিনের শেষে নিজের দিকে চাওয়ার সময়ও থাকত না। তবুও স্বল্প চাহিদায় কত সুখ ছিল মনে। এখন নিজের পুত্রবধূদের মধ্যে নিত্য কলহ, উচ্চাশা, অভিযোগের দীর্ঘ তালিকা মাধবীলতাকে প্রতিদিন নতুনভাবে আশাহত করে। কনিষ্ঠ পুত্রবধূ ভিটেছাড়া। সে কোনোদিনই হয়তো এ বাড়িতে ফিরবে না। শিবালয়ের নিত্যপুজোয় অংশগ্রহণ করবে না। তার কাছে পরিবারের সুখ, সমৃদ্ধি ও স্মৃতির ভাঁড়ার সমৃদ্ধ করার চেয়ে ব্যক্তিগত ভালোলাগার মূল্য অধিক।
গ্রাম থেকে শহরের দূরত্ব বেশি, নাকি মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব বেশি.... তার সঠিক পরিমাপ মাধবীলতা জানে না। কেবল জানে তার চেনা পথ বদলেছে। যাত্রী বদলেছে, যানবাহন বদলেছে। আগে ঘোর বর্ষায় নাগের বাড়িতে পা রাখাটা ছিল এক বিভীষিকাময় অধ্যায়। নাগের বাড়ি থেকে রেল স্টেশনের দূরত্ব বেশি নয়। বরাবরই ঘর-বারান্দা কাঁপিয়ে রেলগাড়ি স্থানীয় স্টেশনে নিজের প্রবেশ ও প্রস্থানের বার্তা জানান দেয়। সেই স্টেশন থেকে বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় বর্ষাকালে কাদার আধিক্য পথযাত্রীর বিরক্তির কারণ হয়ে উঠত। একটা পায়ের গোড়ালি কাদার আলিঙ্গন থেকে টেনে তুলতে না তুলতেই আর একটা পা হারিয়ে যেত কর্দমাক্ত ভূমির অন্তরালে।
রেলস্টেশন থেকে বাড়ি পর্যন্ত পথ অতিক্রম করে একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্রয়ের সামর্থ্য অতীতে একমাত্র নাগ পরিবারেরই ছিল। পাড়ায় সর্বপ্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় তাদের বাড়িতেই। গ্রামাঞ্চলে সূর্যদেবের আগমনে প্রভাত যত দ্রুত হয়, সূর্যাস্তের কালে সন্ধ্যাও জমির ফসল স্পর্শ করে ততটাই শীঘ্র। সবুজ ধানজমির দিগন্তরেখা ছুঁয়ে তড়িঘড়ি গোধূলি নামে। ভারি মজার মানুষ ছিলেন মাধবীলতার স্বামী। সন্ধের পর বাড়ির সকলকে সাক্ষী রেখে হ্যারিকেন হাতে নিয়ে তিনি বিদ্যুতের আলোর সন্ধান করতেন। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বিদ্যুৎ স্থানান্তরিত করার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে প্রদীপের আলোর মতো ক্ষীণ আলো সারাদিন ধরে টিমটিম করে নাগের বাড়ির প্রত্যেকটা ঘরে জ্বলত। টর্চের আলোয় ছাদের দিকে চাইলে দেখা যেত মাথার ওপর পাখা ঘুরছে ঠিকই, তবে সেই বাতাস গায়ে লাগত না। কাজেই হাতপাখার বিরাম ছিল না। তবে সেই আলো-ছায়ায় নবদাম্পত্যের প্রেমের কুঁড়ি ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হয়েছিল।
একতলা ও দোতলা জুড়ে শুরু হয়েছে নিত্যদিনের সাংসারিক কর্ম তৎপরতা। বাবাই ও টুবাই সামান্য প্রাতরাশ সেরে সাইকেলে চেপে চলে গেল পড়তে। শশাঙ্কর ঘর থেকে টুয়ার কন্ঠ ভেসে আসছে। কবিতার সুর ছড়িয়ে পড়ছে একতলায়। দোতলায় মৃগাঙ্কর হাঁকডাকে রান্নাঘরে বাসনের শব্দ হঠাৎ বৃদ্ধি পেল।
কলঘর থেকে স্নান সেরে বিছানার এককোণে চাদর জড়িয়ে দলাপাকানো অবস্থায় একটি দেহকে শুয়ে থাকতে দেখে মাধবীলতা কর্কশ স্বরে চিৎকার করে উঠল,
-কী রে মহারানি? বেলা কত হল, সেই হুঁশ আছে? এমন তোর ঘুম, বাড়িতে ডাকাত পড়লেও ঐ ঘুম ভাঙবে না! তোকে বিছানা থেকে নামিয়ে মাঠে-ঘাটে ছুঁড়ে ফেললেও তুই নাক ডেকে ঘুমোবি। আর কতকাল এভাবে বেলা পর্যন্ত ঘুমোবি রে? ফেল করে তো পড়ালেখার পাট চুকল। এবার বড়দা যে ছেলে ধরে আনবে তার গলায় মালা দিয়ে বিদেয় নে দেখি। কী রে! তখন থেকে ডাকছি, ঘুম ভাঙে না নাকি? আহ্লাদী? এই...
একটানে খানিকটা চাদর সরিয়ে ফেলল মাধবীলতা। একটা কোমল পাশবালিশকে কুন্ডলী পাকিয়ে চাদর দিয়ে সযত্নে ঢেকে রাখা রয়েছে। মাধবীলতার বুক ভয়ে কেঁপে উঠল। আবার মেয়ে না বলে পালাল! গৃহকর্ম সহায়িকা চাঁপা ধূমায়িত চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে গেছে কিছুক্ষণ আগে। চা প্রায় জুড়িয়ে গেল। কাঁপা-কাঁপা কণ্ঠে মাধবীলতা ডেকে উঠল, "আহ্লাদী!"
(চলবে...)
ছবি : সংগৃহীত

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সেই তো এলে ভালোবাসা দ্বিতীয় পর্ব

  সেই তো এলে ভালোবাসা সাথী দাস দ্বিতীয়  পর্ব মধ্যরাতের এমন কত শুভ্র অপ্রাপ্তি ভোরের আলোর সঙ্গে মিশে আলগোছে ভূমি স্পর্শ করে। যা মনকে যাতনা দে...

পপুলার পোস্ট